গল্প

গল্প কীর্তিমান বগলা

কীর্তিমান বগলা

লেখক : সুবীর মুখোপাধ্যায়

অশান্তি, অমর্যাদাযুক্ত কটুবাক্য যথেষ্ট পীড়াদায়ক৷ অবশ্য কারণটাও স্পষ্ট৷ অঘোরবাবু দুই বেকার ছেলে অমল, বিমল দুজনে বেকারত্ব ঘোচাতে বাপের টাকায় ব্যাবসা শুরু করবে৷ মুরোদহীন ছেলেদের, বাক্যবাণ যথেষ্ট প্রবল৷ তারা এক প্রকার হুমকিই দিয়েছে--- টাকা চাই, না হলে দাঁড়াব কবে? বয়স তো হয়ে যাচ্ছে৷ বিপত্নীক অঘোরবাবু ভেবেছেন যে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িটা বেচে, এই অপদার্থ ছেলেদের কিছুকিছু টাকা দিয়ে, দেশের বাড়িতে, গ্রামের দিকে চলে যাবেন৷ অন্ততঃ জীবনের শেষ দিনগুলি শান্তিতে কাটানো যাবে৷ এদিকে ছোট ছেলে বাড়ি বিক্রির জন্য দালাল পাঁচুকে ধরে এনেছে৷ বিমলা-পাঁচুদা ঐ পড়ে থাকা আমাদের জমিদার বাড়িটা বেচে দাও, এটা রেখে লাভ নেই৷

পাঁচু---কাকাবাবু, কি দরে বেচবেন?
বিমল---চল্লিশ, পঞ্চাশ লাখ তো হবেই৷
পাঁচু---বেশ৷ আমার কি হবে?
বিমল---তোমার দালালি বাবদ একলক্ষ পাবে৷ সব শুনছেন প্রকৃত মালিক অঘোরবাবু৷ পাঁচু একটা কথা আছে, পার্টি দেখব, কিন্তু পার্টি পিছু পাঁচশো টাকা লাগবে৷ পার্টি ফিট করারতো পরিশ্রম আছে৷ কারণ ফাইনালে কোন পার্টি যাবে, সেটাতো সময়ে জানা যাবে৷
বিমল---বেশ, তাই হবে৷

এবার অঘোরবাবু---প্রতিবারই পাঁচশো কে দেবে?
বিমল---কেন তুমি ঐ বাড়ির মালিক তুমিই দেবে৷ বাড়ি বেচে তুমিও তো কিছু পাবে৷
অঘোরবাবু---আমার বাপের বাড়ি আমিই মালিক৷ কিন্তু তুই এত বলছিস কেন?
বিমল---আমার টাকা চাই, ব্যাবসা করব৷ কতকাল বেকার থাকব? বাড়ি বিক্রিকরে টাকা দিতে হবে৷ এই শেষ কথা বলে গেলাম৷ পাঁচুদা কাজে লেগে যাও৷

বিমল চলে যেতেই পাঁচু---কাকাবাবু, সব বুঝেছি, বাড়ি দেখানো হবে, আবার বিক্রিও হবে না, তবে আমার ঐ পাঁচশো টাকাই লাগবে৷
অঘোরবাবু---না, বাড়িটা আর রাঘবনা, ছেড়ে দেব৷ তবে কদিন পরে বেচবো৷
পাঁচু---বেশতো, আমি ধীরে ধীরে খেলি৷ আপনি যখন ফাইনালে যেতে চাইবেন, তখনই লাখ টাকা পাব৷ এবার চলি৷ শুরু হয়ে গেছে বাড়ি দেখানো৷ পাঁচু নিয়মিত পাঁচশো পাচ্ছে, আবার যাদের দেখাচ্ছে তাদের থেকেই আবার পাঁচশো পাচ্ছে৷ কিন্তু সব পার্টিই কেটে পড়ছে, বিভিন্ন অছিলায়৷
অমল---বাবা এভাবে সময় নষ্ট হচ্ছে৷
বিমল---আর কতদিন ঝুলে থাকব?
অঘোরবাবু---কি করতে পারি? পার্টি আসছে যাচ্ছে আবার চলেও যাচ্ছে৷ বুঝতে পারছিনা, কেন এসব ঘটছে৷ চিন্তামুক্ত হতে দুই ছেলে কমল, বিমল পরামর্শ দিয়েছে গুণিন, তান্ত্রিক, জ্যোতিষী এবং শেষে গোয়েন্দাদের সাথে যোগাযোগ করতে৷ বিজ্ঞানের প্রাক্তন সুকল শিক্ষক অঘোরবাবুর বিবেচনায় মনে ধরেছে গোয়েন্দাদের সাহায্য নেওয়া, ঝানু গোয়েন্দা হিসাবে এই চত্বরে নাম আছে বগলা মিত্রের৷ বগলা মিত্রের বাড়িতে পৌঁছে গেলেন অঘোরবাবু৷ দরজায় বেল মারতেই দরজা খুলে দাঁড়াল দুটি বাচ্চা ছেলে সন্টু, মন্টু৷

ছোট ছেলেটি মন্টু---কাকে চাই?
বড়টি---কোথা থেকে এসেছেন, কেন এসেছেন?
বাচ্চা দুটির প্রশ্ন শুনে অঘোরবাবু অবাক হয়ে বলেন---বড়দের কাউকে ডাক৷

মন্টু---কেন ছোট বলে আমাদের পছন্দ হচ্ছে নয়?
সন্টু---যা জিজ্ঞাসা করলাম তার উত্তর দিন৷ অঘোরবাবু ভাবছেন এই বাচ্চা দুটির কথার কেন উত্তর দেব৷ এরা ফালতু সময় নষ্ট করছে, আবার দরজা আগলে দাঁড়িয়ে আছে৷

অগত্যা ঊচ্চেঃ স্বরে ডাকলেন---বগলাবাবু, বাড়ি আছেন?

সন্টু---কেন চিৎকার করছেন? ঞ্ঝন্ডন্দ্মদ্রন্ত্র টা বলবেন তো! ইতিমধ্যেই দরজার কাছে চলে এসেছেন বগলাবাবু---কি ব্যাপার?
অঘোরবাবু--- আপনি আপনার শরণাপন্ন৷ ভীষণ সমস্যা৷
মন্টু---আরে সমস্যাটাই বললেন না?
ধমক দিল বগলাবাবু---এই তোরা এখন যা, আমি দেখছি৷
অঘোর ভিতরে প্রবেশ করেই বলেন---ওরে বাবা, আপনার দরজায় এসে দুটি বুলডগের খপ্পরে পড়ব, ভাবিনি৷
বগলা---আসুন, বসুন, কথাগুলি কানে গেছে ঐ দুই বিচ্চু ছেলের৷
মিন্টু--- কি বললেন বুলডগ? মানুষকে কেউ ডগ বলে?
মন্টু---এত ন্ন্ডন্ঠ্থ?
বগলা---এই তোরা ভিতরে যা৷ বলুন, কি সমস্যা৷ অঘোরবাবু বাড়ি বিক্রির জন্য খদ্দের আসছে, কিন্তু একটাও টিকছে না৷
বগলা---এতে গোয়েন্দার কি প্রয়োজন৷ পছন্দ হচ্ছে না, তাই বিক্রি হচ্ছে না, এতে রহস্য কোথায়?
ইতিমধ্যে সন্টু, মন্টু কয়েকটা কলা নিয়ে পাশের সোফায় বসে৷ অঘোরবাবু দেখছেন, বিচ্চু দুটো বলল পছন্দ হয়েছে৷ শীঘ্রই ঙ্ত্মডত্থত্বত্র করবে৷ তারপর শুধু ঞ্ছত্রত্থন্ঠ্থডত্র৷ প্রায় গোটা তিরিশজন এই সাতমাসে বাড়ি দেখেছেন৷
বগলা--- এতে সন্দেহ করার মতো কিছুতো দেখছি না৷
অঘোর---বুঝুন তিরিশজন দেখেছেন, অথচ সব ফেরত যাবে৷ এটা কি হয়? বগলা এটাও ঠিক? তবে ওরা কি বলে বাতিল করেছে?
অঘোর---বিভিন্ন কারণ৷ বিভিন্নজনের৷ কেউ বলে দাম বেশি, কেউ বলে পুরানো বাড়ি, কেউ বলে বাড়ির দোষ আছে, কেউ বলে ভূতের বাড়ি, কেউ বলে রাত্রে ওখান অশরীরীদের দেখা যায়?
বগলা---এত মনে হচ্ছে, তৈরি করা সমস্যা?
হঠাৎই বলে সন্টু--- একদম ঠিক৷ মন্টু বাবা, ওই দালালটাকে ডেকে পাঠাও৷
অঘোরবাবু---বাবা, এরাও দেখছি খুদে গোয়েন্দা৷
বগলা---আসলে সবসময়ে এসবই দেখছে, শুনছে, বুঝতেই পারছেন৷ ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াছেলে বেশ চতুর, ন্ঠত্র্থত্রন্ঠ হয়৷
অঘোরবাবু---তাহলে এখন কি করব বলুন?
বগলা--- আপাতত আপনার দালালের ছবি, ঠিকানা দিয়ে যান এতে কাউকে কিছু বলবেন না৷
অঘোর---এখন আপনাকে কত দেব?
বগলা---কাল যখন ওই সব দিতে আসবেন, আগাম পাঁচ হাজার দেবেন, পরে কাজ হলে বাকিটা নেব৷
মন্টু---আপনার আর দালালটার ফোন নম্বর দিয়ে যান৷
বগলা---ও, ভালোকথা যে পার্টিগুলি বাড়ি দেখে গেছেন৷ তাদের ফোন নং, বাড়ির ঠিকানার তালিকা দেবেন, এক মাসের মধ্যেই সঠিক কারণ জানিয়ে দেব৷
অঘোরবাবু---আমার এলাকায় সকলের জমি, বাড়ি কেনা, বিক্রি হচ্ছে৷ আমার বেলায় যত ঝামেলা?
মন্টু---বাবা, যে বাড়িটা বিক্রির কথা হচ্ছে, তার ঙ্গত্রন্ঠত্থ্থন্তু টাও নিয়ে নাও৷
বগলা---হ্যাঁ, ওই বাড়িটার ঙ্গত্রন্ঠত্থ্থন্তু দেবেন, একদিন দেখব৷ কেন এসব হচ্ছে? সেটাই ভাবছি, কোন নাশকতা, শত্রুতা?
অঘোর---আমিও কোন লোকের সাথেই ঝগড়া বিবাদ করি না৷ শান্তি প্রিয় মানুষ৷ কে আমার শত্রুতা করবে৷ কেনইবা করবে? দুশ্চিন্তা নিয়ে চলে গেলেন অঘোরবাবু৷
মন্টু---বাবা ওই দালাল বার বার বাড়ি দেখাচ্ছে৷ আর বার বার কেঁচিয়ে দিচ্ছে, এটা কিন্তু ভাববার বিষয়৷ বগলাও বুঝেছেন যে একটা মূল্যবান পয়েন্ট এটা৷ যাই হোক পরদিন সব কিছু দিয়ে গেলেন আঘোরবাবু৷ সঙ্গে এনেছিলেন দুটি ক্যাডবেরি চকোলেট৷ পেয়ে দুজনেই বলল---টত্থদ্ধ াদ্রন্ড৷
মন্টু---নিন, একটা কলা খান৷ আচ্ছা, ঐ দলিল যে বাড়ি দেখায় সে কি পায়?
অঘোরবাবু---যতবার বাড়ি দেখায় পাঁচশো করে টাকা নেয়৷
চমকে উঠলেন বগলাবাবু---তাহলে বাড়ি বিক্রি হলে ওর প্রতিবারের জন্য পাঁচশো টাকা৷
অঘোরবাবু---তাতে কি? বিক্রি হলে তো এককালীন এক লক্ষ টাকা পাবে, এটাতো কম নয়৷
বগলা---হ্যাঁ, তাও ঠিক৷ আচ্ছা দালালটার নাম কি?
অঘোরবাবু---পাঁচু, সব আপনাকে দিয়েছি৷ আচ্ছা বাড়িটা বেচবেন কেন?
অঘোর---দুই বেকার ছেলের বেকারত্ব দূর করবার জন্য, মানে তারা ব্যাবসা করবে৷ অঘোরবাবু বুঝলেন যে বেশ জুতসই যুক্তি৷
বগলা---আচ্ছা ওই বাড়িতে আপনাদের যাতায়াত আছে?
অঘোর---একসময়ে ছিল, এখন অন্যত্র থাকি, তাই যাওয়া হয়না৷ তবে ছেলেরা যায় দেখাশোনা করতে৷
বগলা---এখন ওই বাড়িতে কেউ থাকেনা৷ তাইতো, তবে...৷
অঘোর---তবে, একজন মালি আছে, কাছেই থাকে, ও দেখাশোনা করে৷ কিছু মাস্‌ মাহিনা দিই৷ আজ যাই৷ উনি চলে যেতেই ওই বিচ্ছু দুটো বলে বাবা-ওই মালি ওখানে থাকে না কেন? বগলাবাবু এটা নোট করলেন, সত্যিইতো মাইনে পায়, তবুও ওখানে থাকে না? ভাড়া নিয়ে অন্য জায়গায় থাকে৷ এটাও একটা ডত্থ্থত্ম দ্মদ্র্থন্ঠ বগলাবাবুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেখা করতে এসেছে দালাল পাঁচু৷ কথায় চোস্ত মানে তুবড়ি৷
পাঁচু---আমাকে ডেকেছেন কেন জানতে পারি? বলেই মন্টু, সন্টুর কাছে গিয়ে-কি খোকারা ভালোতো!
মন্টু---বসুন৷
বগলা---আপনার সন্ধানে কেনার মতো বাড়ি আছে?
পাঁচু--- কি রকম বাজেট আপনার?
বগলা---বাজেট নিয়ে চিন্তা নেই৷ ভালো বাড়ি চাই৷
একটু ভেবে পাঁচু---হাতে দুতিনটে বাড়ি আছে, একটা বাগান বাড়িও আছে৷ ফাঁকাই পড়ে আছে৷
বগলা---ফাঁকা কেন?
পাঁচু---মালিক অন্য জায়গায় থাকে৷ বেশ বড় ভালো বাড়ি, বনেদি বাড়ি অনেক ঘর আছে৷ আপনাকে দেখিয়ে দেব, তবে স্যার এর জন্য আমাকে দিতে হবে ৫০০ টাকা৷
বগলা---দেখালেই পাঁচশো, ফিট হলে আমার কমিশন এক লক্ষ লাগবে, পয়সাকড়ির ব্যাপার আগে বলে নেওয়াই ভালো৷ বেশ, তাহলে কালই দেখতে যাব৷
পাঁচু---বাড়ি দেখাবার পর, আপনি মালকিকে বলবেন যে আপনার মতামত পরে জানাবেন৷
বগলা---কেন, এরকম বলবো?
পাঁচু---বললে আমার সুবিধা হবে, পাওনা হবে৷
মন্টু---বাঃ, দুদিক থেকেই পাওনা হবে?
পাঁচু---খোকারা, বড়দের মধ্যে কথা বলতে নেই৷
মন্টু---একটা কাজে দুদিক থেকে পয়সা?
পাঁচু---বাবারা, বেশ ছেলে তোমরা, বেঁচে থাকলে বয়স হবে, বড় হবে৷
মন্টু---ঠিকইতো বাঁচলে বয়স বাড়বেই৷ কিন্তু আপনারতো দুদিক থেকেই বাড়বে৷
বগলা ধমক দিয়ে---এই তোরা থাম৷ তাহলে কাল বাড়িটা দেখাবে৷ বাড়িটা দেখা হল, পরিচয় হল মালি কালুর সাথে বাড়ির সামনেই রয়েছে একটা মুদি দোকান৷ রয়েছে এক কর্মচারী ফটিকচন্দ্র৷ পাঁচুকে ছেড়ে দিয়ে, এবার বগলাবাবু এলেন ফটিকচন্দ্রের কাছে, তখন মালিক নেই৷
বগলা---ফটিকবাবু, এই বাড়িটা কিনব ভাবছি, কোন খবর থাকলে বলবেন৷ বলে ফটিককে একশো টাকা দিতেই সে বেশ উৎসাহিত হল, সুযোগে বগলা ফটিকের ফোন নম্বরটা সংগ্রহ করে নিল৷
বগলা---বেশ, ফোনে সব জেনে নেব৷
ফটিক---স্যার, রাত দশটার পর ফোন করবেন, তাহলে বেশ শান্তিতে কথা বলা যাবে৷ বাড়িটায় কিন্তু কোনো খুঁত পাওয়া যায়নি, তবে কেন যে বিক্রি হচ্ছে না, সেটাই ভাবনার৷ পরদিন সকালে হঠাৎই পাঁচু এল৷
বগলা---কি ব্যাপার?
পাঁচু---স্যার, একটু গোপন কথা ছিল৷
বগলা---বল শুনি৷
পাঁচু---এত বড় বাড়ি, পাশে অনেকটা জমি ধরুন মাত্র চল্লিশ লাখে পাইয়ে দেব আপনাকে, তবে আমাকে কিন্তু দশ লাখ দিতে হবে, এমনিতে এটার বাজারদর এক কোটি হবেই৷ হারাধন প্রমোটার ঐ চল্লিশ দরেই কিনতে চায়৷ কিন্তু আমাকে দেবে মাত্র এক লাখ৷ দিলুম কেসটা কেচিয়ে৷ তাছাড়া ঐ বাড়ি করে বিক্রি হবে না৷
বগলা---কেন?
পাঁচু---আছে স্যার গল্প আছে, পরে বলব৷ তবে আমার প্রস্তাবে রাজি হলে বলবেন, এখন যাই৷ হারাধনকে জিজ্ঞাসা করে জানা গেল যে হারাধন এই বাড়ি নেবার জন্য ৫০ লাখ খরচ করতে রাজি ছিল৷ কিন্তু তাতেও রফা হয়নি৷ কারণটা ন্ঠদ্রদ্ম ন্ত্রত্বন্ত্রন্ঠ৷ খবর কিছু পাওয়া গেল ফটিকচন্দ্রের মাধ্যমে জানা গেল রাত্রে এখানে অস্বাভাবিক কিছু ঘটে৷ ব্যাপারটা স্বচক্ষে দেখার জন্য ছদ্মবেশে বগলাবাবু তার দুই চেলা হরেন আর নরেন সহ একদিন রাত্রে পঁৌছে গেলেন ওই বাড়িতে৷ অনেকক্ষণ ধরে সব কিছু দেখেও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গেল না৷ তবুও বগলাবাবুর থার্ড সেন্স বলছে, কিছু নিশ্চয়ই আছে নাহলে গোপনে রাত্রে কেউ আসে কেন? কিন্তু যে আসে, আজ তাকে দেখা যাচ্ছে না কেন? হঠাৎই দূরে, মনে হল কি যেন একটা জন্তুর মতো তাদের দিকে তাকিয়ে আছে, হয়তো এক্ষুনি আক্রমণ করবে৷ পিস্তল নিয়ে তৈরি আছেন বগলাবাবু৷ জন্তুটা অন্ধকারে মনে হল নেকড়ে হবে৷ টর্টের আলো ফেলতেই নেকড়েটা স্থির৷ এমন সময় একটা ইটের টুকরো এসে লাগল নরেনের হাতে৷ টর্টটা পড়ে যেতেই, হুড়মুড় করে শব্দ হল, তারপর আর নেকড়েটাকে দেখা গেল না৷ ওরা তিনজন টর্চ নিয়ে এগিয়ে গেলেও, কিন্তু দেখা গেল না৷ অদ্ভুত অবাক করা রহস্য মিশ্রিত দৃশ্য৷ পরদিন কালো কাপড়ে নিজেদের ঢেকে বগলাবাবু তার দুই সহকারী নিয়ে চুপ করে বসে অপেক্ষায় রইলেন৷ গভীর রাত একজন মানুষ এসে টর্চ দিয়ে কি যেন খঁুজছে৷ এমন সময় নরেন ছুটে ঝাঁপিয়ে পড়লেও, পাশের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে পালিয়ে গেল অন্ধকারে সেই লোকটি এমন সুযোগ হাতছাড়া হওয়াতে সবাই হতাশাগ্রস্ত৷ টর্চের আলোয় খঁুজতে খঁুজতে পাওয়া গেল একটা ছেঁড়া জামা৷ সবই ছেঁড়া, অবশিষ্ট শুধু কলার আর একটা জামার হাতা৷ সংগ্রহ করে বাড়ি এলেন বগলাবাবু৷ ভালো করে পরীক্ষা করে দেখে বুঝলেন কলারে দর্জির দোকানের নাম রয়েছে৷ ত(দ্বত্থন্ন্ঠ ন্ঠত্থ্থদ্রন্দ৷ এবার শুরু হল খোঁজা, নেওয়া হল লোকাল থানার সাহায্য৷ আজ বগলাবাবুর কাছে এসেছে অঘোরবাবুর ছোটো ছেলে, বিমল৷

বিমল---শুনলাম, আমাদের বাড়ির বিক্রির ব্যাপারটা আপনিই দেখছেন৷ একটা কথা পরিষ্কার বলে দিলাম, বিক্রিটা বাবাই করবে, কিন্তুু দামটা ঠিক করব আমি৷ বুঝেছেন নিশ্চয়ই৷
বগলা---কেন?
বিমল---এত বলা আমার পোষায় না, তবে বাবা যখন আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছে, তাই বলেছি কোটি টাকার মালটা বিক্রি হবে চল্লিশ লাখে, ওতে আমি কিছু হাত মারবই৷
বগলা---সেটা বাবার সাথে বুঝে নেবে, তাছাড়া বাড়িটার বদনাম আছে৷
বিমল---আপনিও ভূত, প্রেতে বিশ্বাস করেন? আরে মশাই ওসব কিছু নেই৷ ওসব রটনা৷ ঘটনা হল কমে পাইয়ে দেওয়া হবে, তবে আমার দশ লাখ চাই৷
বগলা---ঠিক আছে৷ পরে জানাব, বাস্ত আছি৷ বগলাবাবু বুঝেছেন বাড়িটা ভালো করে তন্ন তন্ন করে দেখতে হবে আর এই বিমলকে নজরে রাখতে হবে৷ এবার খোঁজ পাওয়া গেছে, ত(দ্বত্থন্ন্ঠ ন্ঠত্থ্থদ্রন্দ থেকে যে ওটা বিমলেরই জামা৷ পরিষ্কার হয়েছে যে বিমল ওখানে যায় নিয়মিত, কিন্তু কেন? কিসের টানে? আবার ঐ জন্তুটাই ওখানে দেখে গেল কেন? কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে৷ কোন পথে এগিয়ে যেতে হবে৷ বোঝাই যাচ্ছে না৷ বিমল কেন বাবাকে আড়ালে রেখে বেশি টাকা দাবি করছে?
নরেন---মনে হয় অতিরিক্ত লোভে৷
হরেন---আরও লোকজন নিয়ে ভালো করে খঁুজলে কিছু ক্লু পাওয়া যাবেই৷
বগলা---বেশ তাই হোক৷
হরেন---তবে স্যার এবার আমরা যাব পিছনের দিক দিয়ে, কেউ জানবেই না, মানে কেউই দেখতে পাবে না, খবরও দ্মত্থ হবে না৷
নরেন---হ্যাঁ, স্যার মনে হয় আমরা যে আসি, এই খবরটা ওই অজানা লোকটার কাছে পঁৌছে যায়৷
বগলা---লোকটা তো ওই বিমল৷
নরেন---কি করে ন্ন্ডন্ত্র হলেন? একটা ছেঁড়া জামা পরে থাকতেই পারে৷
বগলা---চল, কয়েকজন নিয়ে চুপি চুপি যাই৷ ব্যবস্থা মতো যাওয়া হল৷ পুলিশের লোকও আছে৷ বাড়ির চওড়া দেওয়ালে মাঝে মাঝে বেশ ফাঁকা, মনে হয় ইট খুলে পড়ে গেছে৷ এরকম ভাবেই ফাঁকা মোটা দেওয়ালগুলি দেখতে দেখতে হঠাৎ এক জায়গায় এসে নরেন দাঁড়িয়ে যায়৷ একটু এগিয়ে দেখা যায় একটা পশমের খোলস, যেটা দূর থেকে মনে হবে নেকড়ে বা ভল্লুক৷
বগলা---বুঝতে পারছো, এটা দিয়েই ভয় দেখানো হতো, যাতে কেউ না আসে এখানে৷ ভাঙা দেওয়ালের মাঝের গর্ত দিয়ে আলো ফেলে দেখা আলমারি৷ এগিয়ে গিয়ে আলমারি খোলার চেষ্টা করতেই, বহু টানাটানিতে আলমারির একটা পাল্লা খুলে এল, দেখা গেল একটা দরজা৷
পুলিশের বড়বাবু সমীরবাবু---একি রহস্য বলুন তো৷ আলমারির কায়দায় দরজা, মনে হচ্ছে গভীর রহস্য আছে৷ বেশ কয়েকজন মানুষ দরজা খোলার চেষ্টা করছে, কিন্তু সামনেই আছে বড় তালা৷ সেটা না ভাঙলে ঘরে ঢোকা যাবে না৷ শুরু হল তালা ভাঙার প্রক্রিয়া৷ এমন সময় আড়াল থেকে আর্তনাদ, চিৎকার, ‘‘তালা ভাঙবেন না৷ সর্বনাশ হয়ে যাবে াপনাদের৷’’
বগলা---কে বলছেন, সামনে াসুন, না হলে গুলি করতে বাধ্য হব৷ চিৎকার অনুসরণ করে পিছনে যেতেই পর্দা ফাঁস, সমীরবাবু একদম নড়বেন না৷ হাত উপরে তুলুন, না হলে গুলি চলবে৷ কি বিমলবাবু, বেশ ভালোই খেলা চালাচ্ছিলেন৷ কিন্তু এতে কি লাভ?
বিমল---জানেন না কিছুই, এই বাড়িতেই আছে গুপ্তধন৷ আমাদের পূর্বপুরুষরা ছিল জমিদার, তাদের লুকানো গচিছত ধন এই বাড়িতেই আছে, মৃত্যুশয্যায় আমার মা বলে গেছে৷ সে প্রচুর ধন, কিন্তু বহু খঁুজেও হদিশ করতে পারিনি৷
সমীরবাবু---তবে ওসব নেই৷
বিমল---না বড়বাবু৷ মৃত্যুশয্যায় কেউ মিথ্যা বলে না, আছে৷ কিন্তু খঁুজে পাচ্ছি না৷
বগলাবাবু---কি বলেন বড়বাবু৷ তালাটা ভেঙে দিন৷ ভাঙার প্রয়োজন পড়বে না, অ্যাসিড চার্জ করছি, তালাটাই গলে যাবে৷
সমীর---চলুন, তাই হোক৷ সেই মতো ব্যবস্থা হল৷ তালা খুলে গেল৷ দরজা খুলে অভাবনীয় দৃশ্য দেখলেন বগলাবাবু৷ দরজার মধ্যেই বিশাল ঘর, মাঝে টেবিল, একটা চেয়ারে বসে মাথায় হাত দিয়ে ভাবছেন অঘোরবাবু৷ সামনে রাখা আছে টেবিলের উপর একটা নক্‌শা৷
বগলা---কি ব্যাপার অঘোরবাবু? আপনি বাড়ি বেচতে চাইছেন৷ অথচ আবার বিক্রির ব্যবস্থা আটকে দিচ্ছেন কেন? এরকম দ্বিমুখী আচরণের কারণ কি? আর এই নকশাটা কিসের? আর এই গোপন কুঠুরিতে আসেন কিভাবে, আমরা তো দরজা ভেঙে ঢুকেছি৷
অঘোরবাবু---সব বলছি, এই নকশাটায় বলা আছে, গুপ্তধন কোথায় আছে, কিন্তু কিছুতেই এই নক্‌শার রহস্য ভেদ করতে পারছি না, দেখুন এটা একটা ঘড়ির ছবি৷ বড়ো কাঁটা রয়েছে বারোটার ঘরে, আর ছোটো কাঁটা রয়েছে ছয়ের ঘরে, মানে সাড়ে বারোটা৷ আর দেখুন নকশার ডানদিকে শুধু লেখা আছে তঢদ৷ এর দ্বারা কি বুঝবো বলুন? এই বাড়িতেই আছে ঐ গুপ্তধন, সেটার অধিকার কি ছাড়া যায়?
সমীর---তবে বাড়ি বেচবার নাটক কেন?
অঘোরবাবু---ছেলে দুটির চাপে পড়ে, ঐ অপদার্থ অমল, বিমল শুধু টাকা চায়, কাজ করে না, বলছে ব্যাবসা করবে, অগত্যা বলতে বাধ্য হয়েছি বাড়ি বেচে টাকা দেব৷ বাড়ি দেখানো হয়েছে৷ আবার দালাল দ্বারা অজুহাত দেখিয়ে বিক্রি নাকচ করা হয়েছে৷
বগলা---তবে কেন গোয়েন্দা লাগাতে গেলেন?
অঘোরবাবু---ছেলেদের চাপে, যে বাড়ি বিক্রির ব্যাপারে আমি যথেষ্ট আগ্রহী, তাছাড়া আপনারা যদি কিছু সন্ধান পান, কিছুটা পেয়েছেন৷ গুপ্ত কুঠুরির সন্ধান তো পেয়েছেন৷ এবার সবাই দেখুন যদি নক্‌শাটা থেকে কিছু উদ্ধার করতে পারেন৷
বগলা---তাইতো, শুধুমাত্র একটা ঘড়ির ছবি৷
সমীরবাবু---সাড়ে ১২টা মানে কি? লোকে কথায় বলে তো বারোটা বেজে গেছে৷
বগলা---একদম ঠিক, মানে জীবন শেষ হবার পর যা থাকে তাই৷
নরেন---হ্যাঁ স্যার ১২টা মানে জীবন শেষ৷ তারপর সাড়ে ১২টা মানে, পরে যা রইল৷
হরেন---মরণের পরে তো ধন রেখে যায় এবং সেটা মৃত্যুশয্যায় আপনার স্ত্রীও বলে গেছেন৷
অঘোরবাবু---অত শত আমি বুঝি না৷ আপনারা যখন বোঝেন সব বলে দিন, গুপ্তধন কোথায় আছে৷ পেলে আপনাদেরও কিছু দেব৷
বগলা---আসলে এই প্যাঁচ থেকে বেরোতে হবে৷ কিছুইতো নেই শুধু একটা ঘড়ির ছবি৷
এর মধ্যেই বিমল---তাহলে বাবা তুমি বাড়ি বিক্রি হোক চাও না?
অঘোরবাবু---বিক্রি তো করবই, তার আগে গুপ্তধনের খোঁজ না করে, ছেড়ে যাওয়া তো বুদ্ধিমানের কাজ নয়৷ জানতে পেরে উপস্থিত হয় ঐ দালাল৷
পাঁচু---তাই তো বলি৷ পার্টি ঠিক হলেও, ফাইনালে গিয়ে ব্যাক গিয়ার আপনি কেন মেরেছেন৷ ছেলেদের চাপে পড়ে বাড়ি বিক্রির নাটকটা বেশ চালিয়ে গেলেন কাকাবাবু৷
অঘোরবাবু---তাতে তোমার লাভ তো হয়েছে, প্রতিবারই পাঁচশো টাকা৷ এদিকে শলা-পরামর্শ করে নিলেন সমীরবাবু আর বগলা গোয়েন্দা৷ সমীরবাবুর হুকুমে আরও পুলিশ ফোর্স নিয়ে এসে বাড়িটা ঘেরা হল৷ এবার গভীরভাবে মনোনিবেশ করলেন ওই ছকটার দিকে৷
কিছুক্ষণ পর বগলা---তঢদ মানে ঢত্রত্থন্ঠ এবং ঢত্রন্ন্ঠ৷
সমীর---ঠিক ধরেছেন৷ ঢত্রন্ন্ঠ মানে পশ্চিম দিক, ঢত্রত্থন্ঠ মানে সম্পদ৷ তাহলে কি পশ্চিমদিকেই সব সম্পত্তি৷
বগলা---না বড়বাবু, অত সহজ নয়৷ তাছাড়া পশ্চিম দিক তো পুরোটাই ঙ্কত্থত্বদ্ধৃ ওখানে সম্পদ থাকবে কি ভাবে?
সমীর---দেয়াল ভেঙে দেখব?
বগলা---না, ওদিকে হবে না৷ এর অন্য মানে আছে সাড়ে বারোটা?
সমীর---হ্যাঁ, বড়ো কাঁটা তো তাই বলছে৷
বগলা---তাহলে বড়ো কাঁটাটা আছে উত্তর দিকে, সম্ভবত ঐ উত্তরেই খোঁজা শুরু হোক৷ বড়ো কাঁটাটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে বড়ো কিছু৷ শুরু হল জোর তল্লাশি৷ অবশেষে দেওযাল খঁুড়ে পাওয়া গেল বিশাল সিন্দুক৷ যার অর্ধেকটা মাটির নীচে৷ সর্বশেষে পুরো সিন্দুকটা দেখা গেল৷ সিন্দুকের গায়ে লাল সিঁদুরের দাগ, হলুদের দাগ৷ এবার সিন্দুক খোলার পালা৷ কিন্তু এর চাবি কোথায়? লক্ষ্য করে দেখা গেল সিন্দুকের সামনে একটা সাপের ছবি৷ যার মুখটা দক্ষিণ দিকে৷
সমীরবাবু---এবার গোয়েন্দা সাহেব, সিন্দুক ভাঙার ব্যবস্থা করতে হয়৷
বগলা---ভাবতে দিন, নাহলে তো ভাঙতেই হবে৷
সমীরবাবু---বেশ ভাবুন৷
নরেন---স্যার, মিনিটের কাঁটাটা রয়েছে ৬ সংখ্যার কাছাকাছি, অর্থাৎ দিক অনুযায়ী দক্ষিণে৷
বগলা---হ্যাঁ, এটাও ভাববার বিষয়৷ সিন্দুক রয়েছে উত্তরে, তার চাবি কি তাহলে দক্ষিণে? এটা দেখতে হবে৷
হরেন---স্যার, সাপের মুখটাও দক্ষিণে৷
বগলা---সমীরবাবু৷ দক্ষিণদিকে খঁুজুন তো৷ দেওয়াল, মেঝে সব খঁুড়তে বলুন৷ কিছুক্ষণ বাবুই মেঝে খঁুড়ে পাওয়া গেল একটা কলসি, কিন্তু চাবি কোথায়? রয়েছে মূল্যবান রত্ন সব৷
সমীরবাবু---চাবি নেই, কিন্তু এই রত্নগুলির মূল্য অনেক৷
বগলা---তার থেকেও মূল্যবান বর্তমানে ঐ না-পাওয়া চাবিটা৷ বলেই কলসি উল্টে দিতেই, সবশেষে বেরিয়ে পড়ল বেশ বড়ো একটা পিতলের চাবি৷
সমীরবাবু---সাবাস বগলাবাবু৷ আপনার ধারণা প্রায় সবই মিলে যাচ্ছে৷
বগলাবাবু চাবিটা দেখে বলেন৷ কিন্তু এটা যে সে চাবি নয়? দেখুন এর গায়ে তির চিহ্ণ, তারপরে বাঁদিকে একটা দাগ, আবার ডানদিকে দুটি দাগ৷
সমীরবাবু---চেষ্টা করে দেখব একবার?
বগলা---করতে পারেন কিন্তু সফল হবে না৷ সত্যিই ঐ চাবি নিয়ে কসরত করে কিছু করতে পারলেন না সমীরবাবু৷
অঘোরবাবু---কি ভীষণ ঝকমারি, একটা গাঁট খোলেও আবার গাঁট৷
বগলাবাবু---অঘোরবাবু প্রচুর সম্পত্তি সঠিকভাবে, কৌশল করে না রাখলে সব চুরি হয়ে যাবে৷ শ্রদ্ধেয় পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে দেখেছেন যে পাহারায় রয়েছে জ্যান্ত বাঘ৷
অমল ও বিমল---তাহলে এগুলি উদ্ধার হবে না?
বগলা---হবে, ধীরে ভাবতে দাও৷ কিছুক্ষণ পর চাবিটা নিয়ে বগলাবাবু বেশ ভালো করে দেখলেন, তারপর চলে গেলেন সিন্দুকের কাছে৷ চাবিটা ঢুকিয়ে প্রথমে বাঁদিকে একবার মোচড় দিলেন, তারপর ডানদিকে আবার চাবিটা ঢুকিয়ে পর পর দুবার মোচড় দিলেন, খড় খড় করে শব্দ হল৷ এবার সিন্দুকের পাল্লা ধরে টান দিতেই আলমারিটার পাল্লা খুলে গেল৷ দুটি পাল্লা খুলে যা চোখে পড়ল, তাতে সবাই বাকরুদ্ধ৷ থরে থরে সোনা, হিরে জহরত, মোহর আর কত কিছু৷
সবার আগে এগিয়ে এল বিমল---এই সব আমাদের, আপনাদের পারিশ্রমিক দিয়ে দিচ্ছি, এবার আসুন৷
সমীরবাবু এবার পিস্তল বার করে---এক পাও কেউ এগোবেন না, এগুলি সব জমা পড়বে থানার মালখানায়, তারপর খবর যাবে ইনকাম ট্যাক্স অফিসে৷ সবশেষে সরকারি কাজ হবার পর সরকারি নিয়মনীতি মেনে যতটা ফেরত পাবার পাবেন৷
সমীরবাবু---ধন্যবাদ বগলাবাবু, পরে থানায় আসবেন৷ গোয়েন্দা হিসেবে নয়, বন্ধু হিসেবে৷
অঘোরবাবু---বগলাবাবু, এই কাজের জন্য কত পারিশ্রমিক আশা করেন?
বগলাবাবু---ভীষণ ক্লান্ত, এবার যাই৷ যা হবার কাল হবে৷
সমীরবাবু---বগলাবাবু, থানার গাড়ি আপনাকে পঁৌছে দেবে, নমস্কার৷
সবশেষে পাঁচু---কাকাবাবু, আমার কি হবে? পাঁচশো গেল, লাখ টাকা স্বপ্নই রয়ে গেল৷

Copyright © 2022 Rupkatha Live. All Rights Reserved. Powered by : Technotrick Systems.