প্রবন্ধ

প্রবন্ধ নিপীড়িতের লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী

নিপীড়িতের লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী

লেখক : কালীপদ চক্রবর্তী

‘অরণ্যের অধিকার’, ‘হাজার চুরাশির মা’র সেই অপরাজেয় শিল্পী, কথাসাহিত্যিক এবং আমাদের অত্যন্ত প্রিয় মহাশ্বেতা দেবী ৯০ বছর বয়েসে আমাদের ছেড়ে অমৃতলোকের পথে যাত্রা করেছেন। রেখে গেছেন সাধারণ বাঙালী তথা বাংলার ব্রাত্য মানুষের জন্য অক্লান্ত কর্মজীবনের দৃষ্টান্ত। সর্বদা মাটির সাথে মিশে থাকা মানুষটির মৃত্যুতে ক্ষতি হল সাহিত্যের, ক্ষতি হল সামাজিক আন্দোলনের। প্রবীণ কথাশিল্পী, মহাশ্বেতা দেবীর জন্ম ১৪ই জানুয়ারি, ১৯২৬ সালে ঢাকায় (অধুনা বাংলাদেশ)। পিতার নাম মনিষ ঘটক (কবি, উপন্যাসিক এবং সমাজ সেবক) এবং মাতার নাম ধরিত্রী দেবী (লেখিকা এবং সমাজসেবিকা)। মহাশ্বেতা দেবীর বাবা এবং মা দু’জনেই সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। তাদের প্রভাব তাঁর ওপর পড়ে। লেখাপড়া করেন বিশ্বভারতী এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৬৪ সালে বিজয়গড় কলেজের শিক্ষক হিসেবে শুরু হয় তার কর্মজীবন। একটু অন্যরকম কলেজ সেটা। সেখানে শ্রমজীবী মহিলাদেরই পড়ানো হতো। এরপর একসময় তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গেও জড়িত হয়েছিলেন। একপর্যায়ে সব ছেড়ে নজর দিলেন সমাজের পিছিয়ে পড়া এবং আদিবাসী মানুষের দিকে। ভারতের দলিত শ্রেণী ও আদিবাসীদের জীবন ও জিজ্ঞাসার প্রতি তিনি গভীরভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন তখন। যা পর্যায়ক্রমে তার লেখার জগতকে দখল করে নেয়। নারী ও আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তার লেখায় অবহেলিতদের জীবন সর্বাধিক স্থান দখল করে আছে। এ নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। তিনি কি তাদের নিয়ে লিখবেন বলে তাদের জীবনাচার জীবনবোধের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন,নাকি তাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বলেই লেখায় তাদের কথা এসেছে? অবান্তর মনে হতে পারে এ ধরনের প্রশ্ন। কিন্তু যখন মহাশ্বেতা দেবীর ব্যক্তিগত জীবন এবং সাহিত্যের সীমানায় চোখ দেওয়া হবে তখন ভাবিত না হয়ে পারা যায় না। তার সৃষ্টি এবং কর্মজীবনে মহাশ্বেতা দেবী আর ভারতের দলিত শ্রেণীর মানুষের জীবন-চিন্তা একাকার হয়ে গেছে। আর এতটাই সেই একাত্মবোধ যে, তিনি যখন তাদের কথা লেখেন তখন তাদের জীবন-চিত্র সাধারণ পাঠকের চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে ভেসে আসে। তিনি অকৃত্রিমভাবে তা তার লেখায় প্রকাশ করতে পারেন বলেই সর্বমহলে তার গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যায়। পাঠক উপন্যাসে নিজের অনুভূতির কথাগুলো দেখতে পায়, আর বার বার তাকায় মহাশ্বেতা দেবীর দিকে। ভারতের বিহার, মধ্যপ্রদেশ এবং চণ্ডীগড়ে আদিবাসীদের দুর্বিষহ অবস্থা, সেখানে ধর্মীয় জাতিভেদ এমনকি সরকারী কর্মচারী কর্মকর্তাদেরও এই জাতপাতের বেড়াজালে আটকে থাকতে দেখা যায়। প্রচণ্ড আঘাত পান তিনি। ভাবেন মানুষের মাঝে এতবড় দেয়াল কেন তৈরি হবে। সাধারণ মানুষ সমাজের প্রাণ। সেখানে প্রাণকে বাদ দিয়ে কি সমাজের চিন্তা করা যায়? এ ব্যাপারে তার বক্তব্য ছিল,- আমি বিশ্বাস করি, প্রকৃত ইতিহাস তৈরি করে সাধারণ মানুষ। আমি দেখেছি, এই সাধারণ মানুষই যুগ থেকে যুগে আমাদের সৃষ্টিগুলোকে, আমাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে নিচ্ছে। আমাদের যত উপকথা আমাদের যত কিংবদন্তী সবই তো তাদের মাধ্যমেই যুগের পর যুগ টিকে আছে। আমার লেখা সেসব মানুষকে নিয়ে যারা বঞ্চিত, যাদের মূল্যায়ন হয় না। আমার লেখার উপকরণ লুকিয়ে আছে এসব বঞ্চিত মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির মধ্যে। আমি তাদেরকে যত বেশি চিনতে পারব ততই আমার লেখার জগত সমৃদ্ধ হবে। লেখালেখিতে আসার ব্যাপারে তার পারিবারিক ঐতিহ্যও কাজ করেছে। তার বাবা ছিলেন একজন কবি। তার মা-ও ছিলেন কবি। মধ্যবিত্ত জীবনের টানাপোড়েনের সাথেও ছিল তার পরিচয়। তারপরও তার মধ্যে ছিল সৃষ্টির নেশা। ১৯৪৯ সালে তিনি সরকারী চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কমিউনিস্ট আন্দোলনে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ আনা হয়। বলা হয়, তিনি কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অথচ তিনি কখনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন না। সেই অভিযোগে তাকে সরকারী চাকরি হারাতে হয়,চাকরি পাওয়ার এক বছরের মধ্যে। তিনি লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। সুমিত্রা দেবী ছদ্মনামে সচিত্র ভারতে উপন্যাস লেখা শুরু করেন। তার লেখা ঝাঁসির রানী বেরোয় ১৯৫৬ সালে। প্রথম উপন্যাস নতি প্রকাশ হয় ১৯৫৭ সালে। পরবর্তী দুই বছরে বেশ কিছু লেখা তিনি লেখেন। ১৯৬৩ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তারপরই তিনি জ্যোতিষ রায় কলেজে শিক্ষা দেয়ার ব্রত গ্রহণ করেন। সেখানে শরণার্থী গরিব ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করত। সেখান থেকে তিনি দুই বছরের ছুটি নিয়ে যোগ দেন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায়। কাজ করেন প্রতিবেদক হিসেবে। ১৯৮৪ সালে তিনি কলেজের চাকরি ছেড়ে দিয়ে সার্বক্ষণিক লেখালেখি করার জন্য মনোনিবেশ করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বার্তামন পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখার কাজে নিয়োজিত হন। একটানা ৯১ সাল পর্যন্ত কাজ করেন তিনি। বাংলা ভাষায় লেখা তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে প্রায় ১০০টি উপন্যাস, ২০টি ছোট গল্পগ্রন্থ, ৫টি নাটক এবং বহু প্রবন্ধ ও নিবন্ধ রয়েছে। ১৯৮০ সাল থেকে পাক্ষিক বর্তিকা নামের একটি সাময়িকী সম্পাদনা করেছেন। যাতে বঞ্চিত মানুষের কথাই বলা হতো। নারী আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবেও রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি। বিশেষ করে আদিবাসী মানুষের বঞ্চনার কথা তিনি অত্যন্ত জোরালোভাবে তার লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। বঞ্চিত ও নির্যাতিত মানুষের বোধ ও যন্ত্রণা সম্পর্কে তার সম্যক ধারণা লাভের কারণ হিসেবে অনেকেই তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের অনেক ঘটনাকেও দায়ী করেন। যেমন তার স্বামীর কথা ধরা যেতে পারে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তার বিয়ে হয় বিজন ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তিনি ছিলেন বাংলা নাট্যজগতেরর বিখ্যাত এক লেখক। নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্য ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির ( সিপিআই )কর্মী। তাদের পুত্র সন্তান নবারুণের ব্যয়ভার বহন করাও অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে তার জন্য। কারণ বিজনবাবু সংসারের জন্য তেমন কোন কাজই করতে পারতেন না এবং তার আয়ও তেমন ছিল না। সে সময় মহাশ্বেতা দেবীকে অনেক নিম্নআয়ের কাজের সঙ্গেও যুক্ত হতে হয়েছে। টেক্সটাইল মিলে ব্যবহৃত রঙ বিক্রয় করা থেকে শুরু করে বিদেশে বাঁদর রফতানির মতো কাজও তাকে করতে হয়েছে জীবন ধারণের জন্য। এক পর্যায়ে তিনি প্রাইভেট পড়ানোর কাজও করেছেন। এক সময় তিনি পোস্ট অফিসে চাকরি নেন। কিন্তু সেখানেও তিনি টিকতে পারেননি। কারণ কে একজন মার্ক্স ও লেনিনের কিছু বই পাঠিয়েছিল পোস্ট অফিসের মাধ্যমে। বলা হল এটা মহাশ্বেতার কাজ। তিনিই আনিয়েছেন কমিউনিস্টদের বইপত্র। সুতরাং তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য না হয়ে পারেন না। অতঃপর তার আর চাকরিতে থাকার সুযোগ নেই। আসলে সেখান থেকেই তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। তিনি ঝাঁসির রানি নামের গ্রন্থ রচনা করেন তখন। ভারতীয় নেত্রী লক্ষীবাঈকে নিয়ে রচিত হয় এই গ্রন্থ। যিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল ভারতের স্বাধীনতা। একজন লেখক হিসেবে তিনি অত্যন্ত সততার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন ঐ গ্রন্থে। তিনি সেখানে কোনও কারচুপির আশ্রয় নেননি। এ বই লেখার জন্য অভিজ্ঞতা অর্জনের প্রয়োজনে তিনি বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধার করেছেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি ভ্রমণ করেছেন ভারতের বিভিন্ন এলাকা। ভারতের যে এলাকায় লক্ষীবাঈয়ের শাসন ছিল সেসব এলাকার গ্রামে গ্রামে তিনি ঘুরেছেন। গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিশেছেন। ঐসব এলাকায় কিংবদন্তীগুলো তিনি সংগ্রহ করেছেন। জেনেছেন সাধারণ মানুষ লক্ষীবাঈয়ের সেসব স্মৃতিকে কিভাবে ধারণ করে আছে। লেখার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি নারী ও অধিকারহারা মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী হয়ে যান। মনে করা হয় ঝাঁসির রানী লিখতে গিয়ে তার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তার কারণেই হয়েছে এটা। এক পর্যায়ে তার দাম্পত্য জীবনে ধস নেমে আসে। মানসিকভাবে এটা মেনে নেয়া তার জন্য কষ্টকর ছিল। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে তিনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তাতেই তার লেখনী শক্তির বিকাশ ঘটেছে বলে মনে করেন প্রায় সবাই। তার লেখা বিখ্যাত উপন্যাস হাজার চুরাশির মা গোটা বাংলাভাষী মানুষের মধ্যে যে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে তা সম্ভব হয়েছে তার বীক্ষণ এর কারণে। হাজার চুরাশির মা মূলত রচিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নকশাল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। সেখানে কিভাবে যুব সমাজ নিজেদের তারুণ্যকে বিলিয়ে দিয়েছে আন্দোলনের পেছনে তা ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি তার লেখায়। ভারতের বিখ্যাত চিত্র পরিচালক গোবিন্দ নিহলানি এই বইটির চিত্ররূপ দিয়েছেন। তারপর তিনি অপ্রকাশিত ইতিহাস নিয়ে কাজ শুরু করেন। তার লেখায় সেইসব কাহিনী বিবৃত হতে থাকে যা নাকি অন্য আর দশজন থেকে পৃথক। তিনি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আন্দোলনকে তার লেখার মূল বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করেন। তিনি অনুসন্ধান করেন আদিবাসী জনগোষ্ঠী কিভাবে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। কোন কোন এলাকার আদিবাসী নেতাকে জীবন দিতে হয়েছে ব্রিটিশদের বিরোধিতা করার কারণে। সেগুলো তিনি উপন্যাস আকারে প্রকাশের কঠিন কাজ শুরু করেন। তার লেখা অরণ্যের অধিকার এবং চোট্টি মুণ্ডা ও তার তীর উপন্যাস দুটি তেমনি উদাহরণ হিসেবে গণ্য হতে পারে। তিনি বর্তিকা নামের যে সাময়িকীটি প্রকাশ করেন তা বাংলা ভাষায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে। তাদের বঞ্চনা এবং যন্ত্রণাগুলোকে সাহিত্যের উপজীব্য বিষয় হিসেবে তুলে ধরাই যেন সাময়িকীর প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে কাজ করেছে। ভারতের মধ্যে দরিদ্রতম জনগোষ্ঠী হিসেবে খেরিয়াদের নাম উল্লেখযোগ্য। তিনি সেই জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে গঠন করেন আদিবাসী কল্যাণ সমিতি। গঠন করেন আদিম জাতি ঐক্য পরিষদ। এ সংগঠনে পশ্চিমবঙ্গে ৩৮টি আদিবাসীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত হয়। মহাশ্বেতা দেবী দেশী ও বিদেশী অনেক পুরস্কার লাভ করেছেন। তার মধ্যে ১৯৯৭ সালে প্রাপ্ত র‌্যামন ম্যাগসাসে পুরস্কারের নাম করা যায়। যদিও তার এ পুরস্কারটি অর্জনের পেছনে কাজ করেছে তার মানবাধিকার আন্দোলনটি। ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পদ্মবিভূষণ পেয়েছেন ২০০৬ সালে এবং পদ্মশ্রী পুরষ্কার পেয়েছিলেন ১৯৮৬ সাল। সাহিত্যে একাডেমী পুরস্কার লাভ করেছেন তারও আগে অর্থাৎ ১৯৭৯ সালে। জ্ঞানপীঠ পুরষ্কার পেয়েছেন ১৯৯৬ সালে। ২০০৮ সালে পান সার্ক সাহিত্য পুরস্কার। ১৯০৫ সালে নতুন দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে -এ একটি অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগত সাক্ষাত হয়েছিল ওনার সাথে। সে সময় কথায় কথায় আমাকে বলেছিলেন – যা পাবে পড়বে। এমনকি খবররে কাগজের ঠোঙাতে যা লেখা থাকে তাও পড়বে দেখবে অনেক জ্ঞান বাড়বে। যখন দাঁড়িয়ে এসব কথা হচ্ছিল তখন হঠাৎ একটা ফোন এলো। ফোনে কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেললেন। কারণ জিজ্ঞাসা করে জানতে পেরেছিলাম সিঙ্গুর থেকে ফোন এসেছে গুলিতে কয়েকজন চাষি মারা গেছেন। বললেন – আমাকে আজ রাতেই ফিরে যেতে হবে, ওদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। সেদিন দেখেছি এক সত্যিকারের সমাজসেবীকে নিজের সম্মুখে ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে উতলা হতে। বলেছেন – আমার ছেলেরা যে ওখানে মারা যাচ্ছে, আমি এখানে কিভাবে থাকি বল? সে দিনটির কথা আজও আমি ভুলতে পারিনি। পুরস্কারের আলো দিয়ে কখনও মাপা যাবে না মহাশ্বেতা দেবীর ব্যক্তিত্বের গভীরতা, প্রতিভার ব্যাপ্তি। সুউচ্চ মেধা-সাম্রাজ্যের মধ্যে বসবাস করেও এক চুলের জন্য তাঁর পা মাটি থেকে নড়েনি। লেখক সত্তার উন্নাসিকতা কখনও তাকে গ্রাস করে নিতে পারেনি তাঁর সমাজকর্মীর প্রতিবাদী ভঙ্গিমাটিকে। তিনি তাই বিরলদের মধ্যেও বিরলতমা। সবচেয়ে দামি ও বড় পুরস্কার তিনি পেয়েছেন অনেক আগেই তা হচ্ছে বঞ্চিত মানুষের ভালোবাসা। আজ আপনি আমাদের কাছে নেই এটা ভাবতেই পারছি না। আপনাকে আমরা ভুলিনি এবং ভুলবোনা কোনও দিন। ঈশ্বররে কাছে আপনার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। আপনাকে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম।

Copyright © 2022 Rupkatha Live. All Rights Reserved. Powered by : Technotrick Systems.