গল্প

গল্প নব্বর্ষ সংখ্যা✍

বৃন্দাবনের_খসড়া

নব্বর্ষ সংখ্যা✍

বৃন্দাবনের_খসড়া

লেখক : শঙ্খ চক্রবর্তী

একা হও, একা হও। একা হয়ে মনের গহবরে ডুব দাও। হয়তো কোনো কিছুর আলতো ছোঁয়া তোমার মনে গভীর আলোড়নের সৃষ্টি করিবে। আর এই একাকীত্বের থেকেই এদেশের ঘরে ঘরে একখানা করে বৃন্দাবন জন্ম নিবে। অজ্ঞাত অখ্যাত বৃন্দাবন। একেবারে বেকার বৃন্দাবন। চুপচাপ বৌদির হুকুম তামিল করা বৃন্দাবন। তার ভেতরের মানুষটা, চিরায়ত গড্ডালিকা প্রবাহের থেকে স্বতন্ত্র মানুষটা যে কালবিশেষে দেশের সম্পদ হইয়া উঠিতে পারে তেমন বৃন্দাবন।
তবে বৃন্দাবনের ভেতরের মানুষটাকে কেউ চেনে নাই। সে শুধু সোমা বৌদির দেওর, রায় মাসীমার ছোট ছেলে, দিনরাত বেকারত্বের খোঁটা শোনা বৃন্দাবন। সে যখনই তার স্বতন্ত্রতার বুলি আওড়াইয়াছে তখনই অনেকের উপহাসের পাত্র হইয়াছে। তাহার যোগ্যতা লইয়া প্রশ্ন উঠিয়াছে। কিন্তু সে যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কি বলিতে চাহিয়া ছিল তাহা কেউ ভাবিয়া দেখিবার প্রয়োজন বোধ করে নাই। হয়তো তাহার কোনো মঞ্চ নাই তাই। মঞ্চ থাকিলে ব্যাপারটা কতকটা অন্যরকম হইলেও হইতে পারিতো ইহাতে কোনো সন্দেহ নাই।
বৃন্দাবন তাই আজকাল একাকীত্বের পথ অবলম্বন করিয়াছে। নিজের গভীরে ডুব দেওয়া কে শ্রেয় মনে করিয়াছে। পড়াশোনার মাত্রা বাড়াইয়া দিয়াছে। এবং মতামত প্রদান অপেক্ষা নিরীক্ষণ বেশি করিতেছে। সম্ভবত ইহাই প্রকৃত জ্ঞানী ব্যক্তির লক্ষণ। এই পথে মানুষের ভেতরটা চেনা যায় খুব ভাল মতো। জীবনবোধ জন্মায় ভাল রকম। এবং ইহা পরিণত মানসিকতার লক্ষণও বটে।
বৃন্দাবন লিখিয়া থাকে। তাহার লেখার হাত খারাপ নহে। মাঝেমধ্যে তার লেখা প্রবন্ধ গুলি স্থানীয় পাঠক সমাজে আলোচনার বস্তু হইয়া ওঠে। তবু বৃন্দাবন ব্রাত্য। বড় পত্র পত্রিকা এবং প্রকাশক দের কাছে ব্রাত্য। মাঝখানে একাকীত্ব কাটাইবার জন্য বৃন্দাবন ফেসবুকে একাউন্ট খুলিয়াছিল। সেখানে তার বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব হইয়াছিল। তার মধ্যে দু তিনজন বেশ ঘনিষ্ঠ হইয়া ওঠে। কিন্তু যেদিন বৃন্দাবন অনুভব করিল তেলা মাথায় অতিরিক্ত তৈল মর্দন, স্বার্থ সিদ্ধি এবং মুখ চেনাচেনির থেকে সেই ভারচুয়াল জগতটি মুক্ত নয়, সেদিন থেকেই সে ফেসবুকের জগত পরিত্যাগ করিল।
সে জগতে বৃন্দাবনের এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিল। তার সাথে নিজের সমস্ত গোপন কথা আলোচনা করিতে করিতে, আমাদের নায়ক তার ভূবন ভুলিয়াছিল। সেই মেয়েটির কাছ থেকে তার চাওয়া পাওয়ার কিছুই ছিল না। তবুও সে ভূবন ভুলিয়াছিল। কিন্তু সেই মেয়েটিও যেদিন হইতে অনুভব করিল যে বৃন্দাবনের পকেট এবং যোগাযোগ কোনোটিরই জোর নাই, সেও সেদিন হইতে বৃন্দাবনকে এড়াইয়া চলিতে শুরু করিল। আসলে বৃন্দাবন জীবন যুদ্ধে হারিয়াছে। তবুও সে লড়াই করিয়া থাকে। বারবার হারিয়া কিছুদিন বিশ্রাম নেয়। তারপর আবার লড়াই শুরু করে। লড়াই শুরু করে জরাসন্ধের মতো। যে বারবার হারিয়া গিয়াও যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরিয়া আসিতে দ্বিধা বোধ করে নাই। বৃন্দাবনকে দেখিয়া বৃন্দাবনের দাদা হ্যা হ্যা করিয়া হাসে। সে সরকারি চাকুরে। বাবার মৃত্যুর পর বড় ছেলে হিসেবে তাঁর চাকরিটি সে পাইয়াছে। ছোট ভাই বৃন্দাবনের কপালে তাহা জোটে নাই। তাই সে উপহাসের পাত্র।
বৃন্দাবনের দিদির নাম মাধুরী। তার বরের নাম নির্মল। নির্মল বড়লোক ব্যবসাদারের ছেলে। তাদের পুরুষানুক্রমে ব্যবসা। বড়লোক বাবার তৈরি ব্যবসার উত্তরাধিকারী নির্মল। তাদের বাড়ি বর্তমান মুম্বাইতে। পূর্বপুরুষদের ব্যবসা নির্মলের আমলে বাড়িয়াছে একথা সত্য। তাই ছোট শালাকে দেখিলেই নির্মল জ্ঞান দিয়া থাকে। " এভাবে নিশ্চেষ্ট হইয়া থাকে নাকি কেহ আজকাল? কত ধরনের ব্যবসার সুযোগ তো আছে। " কিন্তু নির্মল ভাবিয়া দেখেনা যে ব্যবসার পূঁজি এবং উত্তরাধিকার কোনোটিই বৃন্দাবনের নাই। আর এই কথা তো সত্যি যে নূতন দশটি ব্যবসার নয়টিই চলেনা। তাছাড়া পথ দেখাইবার মতো কে আছে বৃন্দাবনের পাশে। থাকবার মধ্যে বৃন্দাবনের আছে কটি টিউশনি, পড়াশোনা আর ছোটোখাটো পত্র পত্রিকায় লিখিয়া সময় কাটানো। বৃন্দাবন এখন বসিয়া আছে একটি বিরাট বটগাছের ছায়ায়। এখন দুপুর তিনটা বাজে। বটগাছটি একটি বিশাল মাঠের ধারে। বৃন্দাবন বসিয়া আছে চুপচাপ। আজ পয়লা বৈশাখ। বাঙালির জীবনে এটি বড় শুভ দিন। কিন্তু বৃন্দাবনের জীবনে এই দিনটি মোটেই শুভ নহে। বিশেষত এই বছরের পয়লা বৈশাখ। গতকাল রাত হইতে আজ সকাল পর্যন্ত তাহার দুটি টিউশনি চলিয়া গিয়াছে। গিয়াছে সম্পূর্ণ বিনা কারণে। অভিভাবকরা কোনো কারণ দর্শাইতে পারেন নাই। শুভ নববর্ষ জানাইয়া শুধু বলিয়াছেন, " ওরা আর পড়িবেনা।"
বৃন্দাবন জানে বলার মতো কোনো সঙ্গত কারণ ওনাদের হাতে নাই। সে কোনদিন কামাই করেনা, পড়ানোতেও সে যথেষ্ট যত্নবান। ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ফল যথেষ্ট ভালো হয়। তাই ছাড়াইয়া দেওয়ার অন্তর্নিহিত কারণ অন্য। সেটি যে কি সেটাই বৃন্দাবন ভাবিয়া পাইতেছে না। আসলে এদেশের গৃহ শিক্ষক নামের বস্তুটি সমাজের এক দূর্বলতম অংশ। এরা বাড়ির কাজের লোকের চেয়ে ধারে ভারে অনেক উপরে হইলেও পদমর্যাদা এবং প্রয়োজনীয়তায় তাদেরই সমান। অনেকেই ভুলিয়া যান, এই গৃহ শিক্ষক নামের বস্তুটি ভগবানেরই সৃষ্টি। তাঁর যা কিছু সুন্দর তার সবকিছুর কিছু ভাগ তিনি এদেরও দিয়াছেন। ক্ষিধে, তেষ্টা, যন্ত্রণা, কান্না এদেরও আছে। যেদিন এরা থাকিবেনা সমাজের একটা মূল দিকে হয়তো ধস নামিবে। আসলে হয়তো কখনো বিচারের দাঁড়িপাল্লা খারাপ থাকে, নতুবা আমাদের মানদণ্ড ভুল থাকে। সেই কারণেই হয়তো যার জায়গা সিংহাসনে হওয়া উচিত তাকে পথের ধুলায় গড়াগড়ি খাইতে হয়।
যাকগে, এসব বৃন্দাবনের মনের কথা। কোনো সার্বজনীন সত্য নহে। অবশ্য তার মনখারাপ করিয়া বটতলায় বসিয়া থাকার ইহা একমাত্র কারণ নহে। কারণ আছে আরও। প্রমোদ কানন পত্রিকা তার এই লেখাটিও ছাপে নাই। উল্টে শেষ চারবার তারা পান্ডুলিপি পর্যন্ত ফেরত দেয় নাই। অন্য পত্র পত্রিকার দিক থেকেও কোনো খবর নাই। বড় সাহিত্যিক হওয়া আর হয়তো তার হইবে না। ইহাও বৃন্দাবনের মন ভারাক্রান্ত করিবার অন্যতম কারণ। উপরোন্ত আজ সকালে সোমা একটা তুচ্ছ কারণে তার কান মলিয়া দিয়াছে। তার অপরাধ সোমার ফরমায়েশ মতো সে সঠিক সময়ে দুধ কিনিতে যায় নাই। গিয়াছে দশ মিনিট দেরিতে। তার ফল ঐ কানমোলা। কানমোলা খাইয়া বৃন্দাবনের মনে বড় লাগিয়াছে। আজ তাহার অর্থ নাই, প্রতিষ্ঠা নাই বলিয়াই সোমা এমন ঘটনা ঘটাইয়াছে। যে মাকে বৃন্দাবন সবচেয়ে বেশি ভালোবাসিত, তিনিও আজকাল গরীব ছোট ছেলের কথা ভাবেন না। সোমার কাজের কোনো প্রতিবাদ তিনি করেন নাই।
বৃন্দাবনের গলার কাছে এখন কিছু একটা আটকাইয়া আছে। সে ঢোক গিলিয়া সেটিকে নিচে নামাইবার চেষ্টা করিতেছে। পুরুষ মানুষের কাঁদিতে নাই। একথা বৃন্দাবন বিলক্ষণ জানে। তবুও তাহার দুই চোখ ভিজিয়া আসিতেছে। তাহার কেবল মনে হইতেছে চারপাশে কিসের যেন হাহাকার। নাই, নাই, নাই স্নেহ নাই, ভালোবাসা নাই, প্রেম নাই, অন্ন নাই। শুধু ক্ষুধা আছে, কান্না আছে, ঘৃণা আছে। জন্মলগ্নে বৃন্দাবন একটি ফুটফুটে চাঁদ ছিল। তার মুখ দেখিয়া মা হাসিয়া উঠিয়া ছিলেন। তাহার হাসিতে মুক্তো ঝরিতো। কান্নায় ফুল ফুটিতো। আধো আধো কথায় সে তাহার বাবা মার মন আনন্দে ভরাইয়া তুলিত। কিন্তু আজ সে চাঁদ নহে। তাই বৃন্দাবন আজ মরিবে। মরিবে অন্ধকার ঘনাইলেই। তাই সে এখান থেকে নড়িবেনা। মরিয়া এই সমাজের বোঝা সে কমাইয়া দিবে।
বটগাছের গায়ে ঠেস দিয়া বৃন্দাবন চোখ বন্ধ করিতে যাইতে ছিল। এমন সময় তাহার নজর গেল মাঠের উল্টো দিকে। একটি মেয়ে হনহন করিয়া সেইদিক হইতে আসিতেছে। মেয়েটি ঈষৎ স্থুলকায়া এবং চোখে চশমা। এতদূর থেকেও এটা বুঝিতে বৃন্দাবনের অসুবিধা হইল না। বৃন্দাবনের কাছে আসিয়া মেয়েটি সরাসরি তাহার দিকে তাকাইলো।
" আপনি কি বৃন্দাবন? "
বৃন্দাবন মেয়েটির দিকে তাকাইয়া ছিল। মুখখানা ভারী মিষ্টি। বলিতে নাই তাহার ভালো লাগিলো।
" হ্যাঁ আমিই সে। "
তরুণী হাঁপাইতে ছিল। গাছের তলায় যে বেদিতে বৃন্দাবন বসিয়া ছিল মেয়েটি ধপ করিয়া সেখানে বসিয়া পড়িল।
" বাপরে! বাড়িতে আপনাকে পাওয়া যায়না। কত কষ্টের পর আপনাকে পাওয়া গেল। "
" আমাকে কেন প্রয়োজন? " মেয়েটি এবার কটমট করে বৃন্দাবনের দিকে তাকাইলো। তারপর ব্যাগ হইতে একটি পান্ডুলিপি বাহির করিয়া বৃন্দাবনের মুখের সামনে ধরিল। " এখানে এসব কি লিখিয়াছেন? "
পান্ডুলিপি দেখিয়া বৃন্দাবন চমকাইয়া উঠিল। এই পান্ডুলিপি সে প্রমোদ কানন পত্রিকায় জমা দিয়াছিল। এই তরুণী কেমনে তাহা পাইয়াছে। " এটি আপনার কাছে কি করে গেল? "
" সে কথা পরে হইবে। আগে বলুন এইসব ভুলভাল লিখিয়াছেন কেন? "
" কি লিখিয়াছি? "
" মরিবার কথা কেন লিখিয়াছেন? "
" তাতে আপনার কি? "
" অনেক কিছু। আমার প্রশ্নের জবাব দিন। "
" আপনি কে বলুন তো? "
" প্রমোদ কানন পত্রিকার সম্পাদকের একমাত্র কন্যা শিউলি। বাবার শরীর ভালো নাই। তাই বকলমে আমিই সম্পাদক। "
" আপনাকে কোনদিন দেখি নাই। "
" আমার চেম্বার পর্দার আড়ালে। তাই দেখেন নাই। "
" বেশ। আমার লেখা গুলো ছাপেন নাই কেন? "
" ও লেখা আমি ছাপিব না। ওগুলি শুধু আমার কাছে থাকিবে। অত প্রেম ভাব কিসের আপনার? "
" মানে? "
" মানে প্রেমের গল্প লিখিয়া মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে চাহেন নাকি? "
" এ আপনি কি বলিতেছেন? " " ঠিক বলিতেছি। ওগুলির কথা শুধু আমি জানিব। "
শিউলি খানিক থামিল।
" জানেন বাবা অসুস্থ। মা মারা গিয়াছেন সেই ছোটবেলায়। এত বড় পত্রিকা, প্রেসের ব্যবসা, জমি জায়গা দেখিবার কেহ নাই। আমি প্রায় একা। "
" তো? আমি কি করিব? "
" একটা অল্পবয়স্ক মেয়ে হইয়া কেন একটা অল্পবয়স্ক ছেলেকে এই কথা বলিতেছি বোঝেন না? "
" খোলসা করিয়া বলুন। "
" খোলসা করিয়া কি বলিব? কত নিচে আমাকে নামাইতে চাহেন? আপনার লেখা পড়িয়া আর আড়াল হইতে আপনাকে দেখিয়া আমি মরিয়াছি। এই কথা এই মাঠের মধ্যে দাঁড়াইয়া আপনাকে বলিতে হইবে? তার মধ্যে আপনার মরিবার শখ। পাগলের মতো তাই ছুটিয়া আসিয়াছি। আর কিছু শুনিতে চাহেন? "
" অ্যাঁ? "
" আর কি! কেহ তো নাই। তাই লজ্জার মাথা খাইয়া নিজের বিবাহের প্রস্তাব নিজেই আনিয়াছি।"
" যা বাবা। হঠাৎ আপনাকে বিবাহ করিব কেন? "
" আপনার জন্য আমি মরিয়াছি। তাই করিবেন। মানে আপনি করিতে বাধ্য। "
" তাই নাকি? "
" হ্যাঁ। "
" একি জোরজুলুম? "
" যা খুশি ভাবিতে পারেন। কিন্তু পরিত্রাণ পাইবেন না। "
" বেশ। বদলে আমি কি পাইব? "
" প্রমোদ কানন সহ আমাদের যা কিছু সব আমাদের দুজনার হইবে। "
" ও আমার চাইনা। বহির্জগতের জিনিসে আমার আসক্তি নাই। আমি ওর বাইরে কি পাইব? "
" আপনার দোষ গুণ সমেত আপনাকে প্রাণ ভরিয়া ভালোবাসিব। আপনার এঁঠো খাইব। "
" বেশ। "
" তবে আমিও পাওনা গন্ডা বুঝিয়া লইতে চাহি। আমি কি পাইব? "
বৃন্দাবন আর কিছু ভাবিতে পারিতে ছিল না। সে বলিল,
" কর্মব্যস্ত দিনের শেষে প্রতিদিন আপনার কাছে ফিরিয়া আসিব। এই একটি মুখ দেখিয়াই বাকি জীবন কাটাইয়া দিব। আর কিছু? "
" আর জীবনে কোনদিন মরার কথা মাথায় আনিলে খুব খারাপ হইবে কিন্তু। আমার দিব্যি দিলাম। "
গোটা পরিস্থিতিতে বৃন্দাবন কেমন স্তম্ভিত হইয়া গিয়াছিল। শিউলি তাহার হাত ধরিল।
" এখন বাড়ি চলুন। মোবাইলটাও বাড়িতে রাখিয়া আসিয়াছেন। আর আপনার খোঁজ না পাইয়া আপনার মা ছটফট করিতেছেন। আমি তাঁকে কথা দিয়াছি আপনাকে লইয়া ফিরিব। "
নিয়তি সবসময় নিষ্ঠুর নহেন।

Copyright © 2022 Rupkatha Live. All Rights Reserved. Powered by : Technotrick Systems.